ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির আদালত চত্বরে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক মামলার আসামির সঙ্গে নির্যাতিত তরুণীর বিয়ে হয়েছে। ঝালকাঠির অবকাশকালীন জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহর নির্দেশে রবিবার দুপুরে দুইপক্ষের উপস্থিতে বিয়ে পড়ান কাজী মাওলানা মো. সৈয়দ বশির। এ বিয়ের বর হলেন বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগাতি গ্রামের আনোয়ার সরদারের ছেলে নাঈম সরদার (২২), আর কনে হলেন ঝালকাঠির বালিঘোনা গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের মেয়ে আরজু আক্তার (১৮)। বিয়ের পর আসামি বর নাঈমের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক মো. শহিদুল্লাহ। নবদম্পতিকে মিষ্টি মুখ করান আদালতের কর্মচারীরা।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি আবদুল মান্নান রসুল বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ফয়সাল খান জানান, ঝালকাঠি সদর উপজেলার বালিঘোনা গ্রামের আরজু আক্তার গত ৮ নভেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তাকে জোড়পূর্বক জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করা হয়েছে বলে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। বিচারক তাঁর অভিযোগ ঝালকাঠি থানায় এফআইআর হিসেবে রেকর্ডরে নির্দেশ দেন। ১২ নভেম্বর ঝালকাঠি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(১) ধারায় এফআইআর রেকর্ড হলে একমাত্র আসামি নাঈমের বাবা আনোয়ার হোসেন ছেলেকে ১৩ নভেম্বর ঝালকাঠি থানায় সোপর্দ করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই নাজমুজ্জামান আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন।
আদালত নাঈমের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। রবিবার অবকাশকালীন জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামির জামিন শুনানীর সময় আসামি পক্ষ নির্যাতিত মেয়েটিকে বিবাহের আগ্রহ প্রকাশ করলে এবং নির্যাতিত পক্ষও প্রস্তাবে রাজি হলে বিচারক মো. শহিদুল্লাহ আদালত চত্বরেই ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহের নির্দেশ দেন। আদালত চত্বরে আসামি, ভিকটিম ও উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আদালতে কাগজপত্র জমা দিলে শুনানী শেষে বিশ হাজার টাকা বন্ডে আসামির জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। বর নাঈম পেশায় একজন ইলেক্টট্রিশিয়ান এবং কনে আরজু দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখা পড়া করেছে। ২০১৯ সালের প্রথমদিকে তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় এবং প্রেম হয়। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত দশটায় আরজুদের বাড়ির পেছনের বাগানে মোবাইলে ডেকে এনে আরজুকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে নাঈম।
Leave a Reply